You Are Currently Viewing ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস

২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস

আপনারা অনেকেই ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস সম্পর্কে বলবো।

২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস

স্বাধীনতার ঘোষণা:

  • ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন।
  • ২৬ মার্চ ভোর ১টা ০৫ মিনিটে তিনি টেলিফোনে মোশাররফ হোসেনকে স্বাধীনতার ঘোষণার বার্তা পাঠান।
  • এম. এ. হান্নান চট্টগ্রামের কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন
  • স্বাধীনতার ঘোষণা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।

যুদ্ধের সূচনা:

  • ২৬ মার্চ সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়।
  • মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে।
  • নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা চলতে থাকে

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা:

  • বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ : ৭ মার্চ
  • স্বাধীনতা ঘোষণা: ২৫ মার্চ, রাত
  • মুক্তিযুদ্ধের সূচনা: ২৬ মার্চ
  • স্বাধীনতা লাভ: ১৬ ডিসেম্বর

২৬ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনএই দিনে আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলামএই দিন আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক

স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ বলিদান করেছেন তাদের স্মরণে এই দিন আমরা শোক পালন করিএই দিন আমরা আমাদের স্বাধীনতার মূল্য বুঝতে শিখি এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে আরও উন্নত করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি

২৬শে মার্চ কি হয়েছিল?

২৬শে মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিনএই দিনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল

ঘটনার সারসংক্ষেপ:

  • ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন
  • ২৬ মার্চ ভোর  টা  মিনিটে তিনি টেলিফোনে মোশাররফ হোসেনকে স্বাধীনতার ঘোষণার বার্তা পাঠান
  • এম  হান্নান চট্টগ্রামের কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন
  • স্বাধীনতার ঘোষণা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে
  • ২৬ মার্চ সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়
  • মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে
  • নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা চলতে থাকে

২৬ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনএই দিনে আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলামএই দিন আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক

স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ বলিদান করেছেন তাদের স্মরণে এই দিন আমরা শোক পালন করিএই দিন আমরা আমাদের স্বাধীনতার মূল্য বুঝতে শিখি এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে আরও উন্নত করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি

বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় কেন?

বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রধান কারণ হল:

রাজনৈতিক কারণ:

  • অসম অংশীদারিত্ব: পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের মধ্যে (পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান)
  • সাংস্কৃতিক বৈষম্য: পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি সংস্কৃতি ও ভাষা পশ্চিম পাকিস্তানের
  • অর্থনৈতিক শোষণ: পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে ব্যবহার করা হত

অর্থনৈতিক কারণ:

  • অর্থনৈতিক বৈষম্য: পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় অনেক
  • শোষণ: পূর্ব পাকিস্তানের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা হত না।
  • কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি: কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি পূর্ব পাকিস্তানের

সামাজিক কারণ:

  • ভাষা আন্দোলন: ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে
  • গণহত্যা: ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর

এই সব কারণে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে এবং স্বাধীনতার দাবি জানায়১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ শুরু হয় এবং মাস যুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে

১৯৭১ সালে কি হয়েছিল?

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটেছিল। পাকিস্তানের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে।

১৯৭১ সালের ঘটনাবলী:

  • ২৫ মার্চ: রাত ১১ টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু করে ঢাকা ও অন্যান্য শহরে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর গণহত্যা চালায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
  • ২৬ মার্চ: স্বাধীনতার ঘোষণা পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে।
  • ২৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তান সেনারা পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়।
  • ১৭ এপ্রিল: তেজগাঁও শিল্প এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়।
  • ২৫ মে: ‘মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ নেতা’ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বীকৃতি প্রদান করে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়।
  • ১৬ ডিসেম্বর: ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে।
  • ১৬ ডিসেম্বর: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

১৯৭১ সালের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা:

  • স্বাধীনতা ঘোষণা: ২৬ মার্চ, ১৯৭১
  • মুক্তিযুদ্ধ: ২৬ মার্চ – ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১
  • মুজিবনগর সরকার: ২৫ মে, ১৯৭১
  • স্বাধীনতা লাভ: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১
  • বঙ্গবন্ধুর জাতির উদ্দেশে ভाषण: ১০ জানুয়ারী, ১৯৭২

১৯৭১ সালের যুদ্ধে বাংলাদেশ অনেক মূল্যবান জীবন হারিয়েছেএই যুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং দিনটিকে আমরা সর্বদা গর্বের সাথে স্মরণ করবো

বাংলাদেশ ভারত নাকি পাকিস্তানের অংশ?

বাংলাদেশ নৈতিকভাবে, ভৌগোলিকভাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারত নয়, বরং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার কারণ:

  • পাকিস্তানের অত্যাচার  শোষণ
  • অর্থনৈতিক বৈষম্য
  • সাংস্কৃতিক বৈষম্য
  • ভাষা আন্দোলন

বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস সংস্কৃতি সমৃদ্ধ দেশবাংলাদেশ একটি সংসদীয় গণতন্ত্র এবং এখানে বহু দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিদ্যমান

বাংলাদেশ ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেদুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে

তবে, বাংলাদেশ কখনোই ভারতের অংশ হবে নাবাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং সর্বদা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে

২৬ মার্চ কি দিবস পালন করা হয়?

২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা জাতীয় দিবস পালন করা হয়১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেনয় মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেতারপর থেকে প্রতিবছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ জাতীয় শোক দিবস এবং ২৭ মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়২০ ১১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হয়

২৬ মার্চ দিবসে বাংলাদেশের সর্বত্র বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকালে জাতীয় শোক পালন করা হয়এরপর স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারা দেশে বর্ণাঢ্য উৎসব পালিত হয়জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্যারেড, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি আয়োজিত হয়

২৬ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিনএই দিনটি বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা ত্যাগের প্রতীক

আমি আশা করছি আপনারা আপনাদের ”২৬ মার্চ ১৯৭১ এর ইতিহাস” এই প্রশ্নের উওর পেয়েছেন। আরো কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
আরও পড়ুনঃ ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস

Sadia Rahman Mim

আমি Sadia Rahman Mim, intern nurse at Shaheed Tajuddin Ahmad Medical College Hospital & প্রফেশনাল ব্লগার। আমি একজন প্রফেশনাল এসইও এক্সপার্ট। পড়াশোনার পাশাপাশি মূলত ব্লগিং করি।

Leave a Reply